প্রতিনিধি: নয় মাস আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উত্তর চরবংশী ইউপির সিকদারকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ জাকির হোসেন (৩০)। সেখানে ফ্রি ভিসায় চালকের কাজও শুরু করেছিলেন। কিন্তু গত (২৭ জুন) বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি আরবের আলদোয়াদমি এলাকায় নীজ গাড়ী চালানোর সময় ব্রেক ফেল হয়ে সড়কেই মারা যান জাকির। মরদেহ এখনও সৌদি আরবের আলদোয়াদমি জেনারেল হাসপাতালের হিমঘরে আছে। প্রায় ১১ হাজার ৬’শ দেহরাম ( পোনে ৪ লাখ টাকা) অভাবে দেশে আনতে পারছে না বলে জানিয়েছে পরিবার।
নিহত মোহাম্মদ জাকির হোসেন রায়পুরের দক্ষিন চরবংশী ইউপির হাজিমারা আশ্রয়নের পাশে রুস্তম আলী সিকদারের ৩য় ছেলে। তারা চার ভাই ও এক বোন। নিহত জাকিরের স্ত্রী ও ৫ মাসের এক শিশু সন্তান রয়েছে।
জাকিরের দিনমজুর বড় ভাই মিলন সিকদার (৪০) জানান, জাকির প্রায় নয় মাস আগে সৌদি আরব যান। এর আগেও একবার বিদেশ গিয়ে এক মাস থেকে বাড়ীতে চলে আসেন। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ৮ লাখ টাকা ঋণ এবং বসতঘর ও জমি বিক্রি করে ১৩ লাখ টাকা দেয়া হয়। গত ২৭ জুন রাতে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান জাকির। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঋণের বোঝায় জাকিরের পরিবার হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
বৃদ্ধ রুস্তম আলী সিকদার (৭০) বলেন, ‘আমার চার ছেলে ও এক মেয়ে। ৩য় ছেলে জাকির হোসেনকে ধারদেনা করে নয় মাস আগেই সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলাম। বড় আশা নিয়ে চাচাতো ভাই মুজাম্মেল সিকদারের মাধ্যমে বসতঘর, জমি বিক্রি করে এবং প্রায় ৭ লাখ টাকা এনজিও ঋণ নিয়ে আমার ছেলেকে বিদেশে পাঠাই। কিন্তু ৯ মাস যেতে না যেতেই আমার ছেলে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেলো।
তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে লাশ আনতে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানায় আমার বড় ছেলে। কোথা থেকে এত টাকা সংগ্রহ করবো? তিন সপ্তাহের বেশি হয়ে হয়ে গেলো, কিন্তু টাকার অভাবে ছেলের লাশ আনতে পারছি না। স্থানীয় এনজিও সংস্থা গুলো টাকার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে।’
রুস্তম আলী বলেন, ‘ছেলের লাশটা পাইলেও কিছু সান্ত্বনা পাইতাম। বিদেশ থেকে ছেলের লাশটারে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাই।
রায়পুরের উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, বিদেশ থেকে ওই যুবকের লাশ আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবে পরিবারের লোকজন যুবকের লাশ আনতে পারছে না। ওই পরিবারকে সহায়তার চেষ্টা করা হবে।